রুট পারমিট ও ফিটনেস পেতে ৪৬ শতাংশ মালিককে ঘুষ দিতে হয়

Passenger Voice    |    ০২:০৬ পিএম, ২০২৪-০৩-০৫


রুট পারমিট ও ফিটনেস পেতে ৪৬ শতাংশ মালিককে ঘুষ দিতে হয়

বেসরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক পরিবহনের রুট পারমিট, ফিটনেস সনদ ইস্যু ও নবায়নে গড়ে ৪৬ শতাংশের বেশি মালিককে ঘুষ দিতে হয় বলে জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থ দেওয়ার কারণ হিসেবে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে দালালের সহায়তায় সেবা নেওয়া, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশ ও পরীক্ষা না করে ফিটনেসসহ অন্যান্য সনদ নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীতে‌ মালিকানাধীন বাস পরিবহন ব্যবস্থায় শুদ্ধাচার শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য তুলে ধরে টিআইবি।‌

গবেষণায় দেখা যায়, বিআরটিএ হতে বাসের নিবন্ধনসহ বিভিন্ন প্রকার সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে বাস মালিক ও চালকেরা সময়ক্ষেপণসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির শিকার হয়। গত এক বছরে নিবন্ধন ও সনদ সংক্রান্ত সেবা পেতে‌ গড়ে ৪৬ শতাংশ মালিককে ঘুষ দিতে হয়েছে। এরমধ্যে মোটরযান সনদ ইস্যু ও‌ নবায়নে ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ, রুট পারমিটে ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ফিটনেস সনদ নবায়ন ও ইস্যুতে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষকে ঘুষ দিতে হয়েছে। একই ভাবে মোটরযান সনদ ইস্যু ও‌ নবায়নে বাস প্রতি ১২ হাজার ২৭২ টাকা, ফিটনেস সনদ নবায়ন ও ইস্যুতে বাস প্রতি ৭ হাজার ৬৩৫ টাকা এবং রুট পারমিট সনদ নবায়ন ও ইস্যুতে বাস প্রতি ৫ হাজার ৯৯৯ টাকা ঘুষ দিতে হয়। সর্বোচ্চ ২০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে।

গবেষণা পরিচালনা করেন মুহা. নুরুজ্জামান ফরহাদ, ফারহানা রহমান ও মোহাম্মদ নূরে আলম।‌ অনুষ্ঠানে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

গবেষণায় উঠে আসে যে, সড়কে শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ ও‌ জনবলের পর্যাপ্ত জনবলের ঘাটতি রয়েছে।

গবেষণায় দেখানো‌‌ হয়, ৩২টি জেলায় বাস কর্মী/শ্রমিক, বাস মালিক, বাস যাত্রীর ওপর ২০২৩ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গবেষণার তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ করা হয়। এছাড়া জরিপের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়‌ ২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত।

চেকলিস্টের মাধ্যমে ৩২টি জেলার ৫১ বাস টার্মিনাল পর্যবেক্ষণ করা হয়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট খাতের ৩৭ জন মুখ্য তথ্যদাতার (বিআরটিএ, আরজেএসসি, সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং যাত্রী ও কর্মী/শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা এনজিওর প্রতিনিধি, গবেষক/বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক) সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। অপরদিকে, পরোক্ষ তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট নীতি, আইন ও বিধি, গবেষণা প্রতিবেদন, ওয়েবসাইট, সংবাদপত্র ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করা হয়েছে।

গবেষণায় শুধু বাংলাদেশের ব্যক্তিমালিকানাধীন বাস পরিবহন ব্যবসায় শুদ্ধাচার পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই‌ গবেষণায় বিআরটিসির বাস অন্তর্ভুক্ত নয়। ব্যক্তিমালিকানাধীন বাস পরিবহন যেমন নির্দিষ্ট ভাড়ায় চালিত ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানি/মালিক সমিতি পরিচালিত বাস ও মিনিবাসে যাত্রী পরিবহন ব্যবসাকে বুঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে আন্তঃজেলা-দূরপাল্লা, আন্তঃজেলা-আঞ্চলিক ও সিটি সার্ভিস (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।